বাঁকখালী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নাব্যতা ফেরানোর তাগিদ

কক্সবাজার শহরের প্রাচীন নদী বাঁকখালী। নদীর সর্বশেষ ঠিকানা উত্তর নুনিয়াছটার নাজিরারটেক সৈকতে বুধবার দুপুরে কোস্টাল রিভার ক্যাম্প করেছেন ঢাকার গাজীপুর কমার্স কলেজের দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী। সবাই ওই কলেজের রিভার ডিফেন্ডার্স ক্লাব ও বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের সদস্য।
এর আগে সকাল ১০টায় শহরের বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঘাট থেকে নৌকায় বাঁকখালী নদীর অন্তত ছয় কিলোমিটার এলাকা নুনিয়াছড়া, খুরুস্কুল ও মাঝিরঘাট পরিদর্শন করেন তাঁরা। দুপুরে নাজিরারটেক সৈকতে কোস্টাল রিভার ক্যাম্পে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রিভার সিস্টেম, প্যারাবন, জীববৈচিত্র্য ও নদী সুরক্ষায় করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন। ক্যাম্প শেষে সাগরদ্বীপ মহেশখালী ঘুরে দেখেন শিক্ষার্থীরা।
কলেজের অধ্যক্ষ সাকির আল মামুনের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন, অনলাইনভিত্তিক নিউজ চ্যানেল ডিএনএনের সম্পাদক আনছার হোসেন, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম মাহমুদ, পরিবেশ ও নদী রক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন প্রমুখ।
অধ্যক্ষ সাকিব আল মামুন বলেন, বাঁকখালী নদীর দৈর্ঘ্য ৬৯ কিলোমিটার। অসংখ্য বাঁক নিয়ে সৃষ্টি বলেই নদীর নামকরণ বাঁকখালী হয়েছে। সত্যিকার অর্থে বাঁকখালী নদীকে একটি ছুটন্ত সাপের মতো দেখায়। একটি বাঁক শেষ হতে না হতেই আরেকটা বাঁক শুরু হয়। কিন্তু দখলদারের নিষ্ঠুর থাবায় নদীটি বৈচিত্র্য হারিয়েছে। প্যারাবন উজাড় হচ্ছে। পাখির আবাসস্থল ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে।
বাঁকখালী নদী সুরক্ষায় দুই তীরের অবৈধ দখল ও স্থাপনা দ্রুত উচ্ছেদের তাগিদ দিয়ে সাংবাদিক আনসার হোসেন বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন, পৌরসভা, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ একাধিক সংস্থা ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ যৌথ অভিযান চালিয়ে নদীর কস্তুরাঘাট অংশ থেকে চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ৩০০ একরের মতো প্যারাবন দখলমুক্ত করেন। নদীর বিভিন্ন অংশে আরও কয়েক শ অবৈধ স্থাপনা থেকে গেছে। এসব স্থাপনা দ্রুত উচ্ছেদ করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, কোস্টাল রিভার ক্যাম্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নদীভাবাপন্ন করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যে দেশে নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে, সেই দেশের শিক্ষার্থীরা যদি নদীর কদর বুঝতে না পারেন, তাহলে কখনোই নদীর সুরক্ষা সম্ভব হবে না।