Tuesday, February 4, 2025
HomeNationalঠাকুরগাঁওয়ের নদ–নদী বাঁচান

ঠাকুরগাঁওয়ের নদ–নদী বাঁচান

একের পর এক নদ–নদী খনন করা হয়, খরচ করা হয় শত শত কোটি টাকা। সে তুলনায় নদ–নদীগুলো আসলে কতটা প্রাণ ফিরে পায়, প্রশ্ন থেকেই যায়। যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি ঠাকুরগাঁওয়ে।

জেলাটিকে ঘিরে রেখেছে টাঙ্গন, কুলিক, সুক, অহনা, তিরনই, নাগর, ভুল্লি, সেনুয়া, ভক্তি, পাথরাজ—এসব নদ-নদী। দীর্ঘদিন ধরে দখল, দূষণ ও অবহেলায় বিপন্ন সেগুলো। সেগুলোর প্রাণ ফেরাতে একের পর এক খাল ও নদ-নদীতে খনন করা হলেও তা কোনো কাজে আসেনি। অপরিকল্পিত খননের কারণে অর্থ অপচয়ই ঘটেছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নেওয়া এক প্রকল্পের অধীন ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে টাঙ্গন, সুক, লাচ্ছি ও যমুনা খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। অন্য একটি প্রকল্পে সদর উপজেলার ভুল্লি, ঢেপা, কুলিক নদ–নদীও খনন করা হয়।

টাঙ্গন নদের ৩৫ কিলোমিটার খনন করে ঘাস ও সাত হাজার গাছ লাগানোর প্রকল্প এবং সুক নদের ২৪ কিলোমিটার খননের প্রকল্পে ব্যয় করা হয় ৩১ কোটি টাকার বেশি অর্থ। নদ–নদী খননের ক্ষেত্রে ঠিকাদারেরা যে অনিয়ম করে থাকেন, এখানেও সেটি ঘটেছে। দুটি নদ থেকে খনন করা বালু পাড়েই ফেলা হয়েছে, ফলে বৃষ্টিতে তা আবার নদেই ফিরে গেছে। এতে নদের তলদেশ আবার ভরাট হয়ে গেছে। ফলে নদের মধ্যেই ধান চাষ করেন কৃষকেরা।

বোঝাই যাচ্ছে, নামকাওয়াস্তে পরিকল্পনা নিয়ে খননকাজগুলো হয়েছে। যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, একটি বিশেষজ্ঞ দল এ প্রকল্প পরিকল্পনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। সে ক্ষেত্রে প্রকল্পটি অপরিকল্পিত, তা বলার সুযোগ নেই। নদ–নদী রক্ষায় কাজ করা ‘রিভারাইন পিপল’ সংগঠনের পরিচালক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, পাউবোর নদ–নদী খননের কার্যক্রম অপরিকল্পিত, বিজ্ঞানসম্মতও হয়নি। খননের সময় কোনো নদ–নদীর প্রকৃত প্রস্থ মেপে দেখার প্রয়োজন তারা মনে করেনি।

খননকাজে অনিয়মের জন্য ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ঢাকার তাজুল-নিয়াজ জেভি এবং এসআর অ্যান্ড জেএইচ জেভি। পাউবো বলছে, কিছু কাজ বাকি থাকায় ঠিকাদারদের ৯ কোটি টাকা বিল কম দেওয়া হয়েছে। এটিকেই তারা ‘শাস্তি’ হিসেবে দেখছে। কিন্তু নদ–নদীগুলো যে প্রাণ ফিরে পেল না, তার কী হবে?

এ ছাড়া সুক ও টাঙ্গন নদের সীমানা নির্ধারণের মধ্য দিয়ে ৩০৩ জন দখলদারকে শনাক্ত করা হয়েছে সরকারিভাবে। জেলা প্রশাসন নদ–নদী দখলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে বললেও তাদের কথার কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। তাহলে কি জেলা প্রশাসন দখলদারদের কাছে হার মেনে নিল?

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments