
দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়েই নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে চলছে পুরোদমে বোরো আবাদ। হাওরের কৃষকদের একমাত্র ফসল এটি। আর এ ফসলের উপর নির্ভিরশীল এ অঞ্চলের কৃষকরা। কিন্তু হাওরের পানি পুরোপুরি না সরায় দেরিতে চারা রোপন করতে হচ্ছে কৃষকদের। যে কারণে ফসল তোলার সময় আবার হাওরে পানি আসার দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।
সেইসাথে রয়েছে ডিজেল ও সারের বাড়তি দামের সঙ্কট। এসকল নানা সঙ্কট মাথায় নিয়েই খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলায় কাকডাকা ভোর থেকে মাঠে নামেন এখানকার কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫শত ৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তারমধ্যে হাইব্রিড ৩৪ হাজর ৫৮৫ হেক্টর। উপসী ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৭২০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ২৭০ হেক্টর। এ বছর চালের উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লক্ষ ৭০ হাজার ৭০২ মেট্রিক টন। এদিকে হাওলাঞ্চলে এবার বোরো আবাদ হচ্ছে ৪০ হাজার হেক্টর।
জেলার সবচেয়ে বড় ডিঙ্গাপোতা হাওর সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষি প্রধান জেলা নেত্রকোনা। আর নেত্রকোনার ধানের বড় উৎস হচ্ছে হাওরগুলো। বেশিরভাগ ধানই উৎপাদন হয় এই হাওরাঞ্চল থেকে। হাওরের একটি মাত্র ফসল হচ্ছে বোরো ধান। প্রতি বছরের ন্যায় পানিতে তলিয়ে নেয়ার শঙ্কা মাথায় নিয়েও জমি আবাদ করে যাচ্ছেন নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওরের কৃষকরা। এটি ছাড়াও এবার ডিজেল ও সারের বাড়তি মূল্যের কারণে হিমশিম খাচ্ছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের কৃষকরা। অনেকে জমি পত্তন নিয়ে খোরাকির আশায় চাষাবাদ করেন। ফলে ঋণ করে জমি চাষ করতে হয় তাদের। এরপরও আহার মেটাতে এখানকার কৃষকরা রোপনে ব্যস্ত।
মল্লিকপুর গ্রামের লিংকন তালুকদাসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র মাঝারি কৃষক ও শ্রমিকরা জানান, দিনে দিনে পলি জমে, অপরিকল্পিত বাঁধ ও ফিশারি ব্যবসার কারণে গত দু বছর ধরে হাওরের পানি সরতে দেরি হয়। যে কারণে ফসল পাকতে পুনরায় হাওরে পানি আসার সময় হয়ে পড়ে। আবার আগাম পানি এলে তলিয়ে যায় পুরো হাওরের ফসল। এসকল দুশ্চিন্তায় থাকেন তারা।