Tuesday, February 4, 2025
HomeLocalবাফলার বিলে অতিথি পাখির মেলা

বাফলার বিলে অতিথি পাখির মেলা

বাফলার বিলে অতিথি পাখির মেলা।

প্রকৃতিতে বইছে শীত। আর শীতের শুরুতেই নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাফলার বিলে আসতে শুরু করেছে ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। আর এসব পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত এখন পুরো বাফলার বিল পাড়া গ্রাম।

নানা জাতের পাখির কিচিরমিচির শব্দে প্রকৃতিতে এক অপরূপ দৃশ্য ফুটে উঠেছে। হাজারো পাখি এই বিলে এসে যেন এক অপরুপ সৌন্দর্যের হাতছানি দিচ্ছে। ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি এসে পড়ছে বিলের জলাশয় ও হাফিজ উদ্দিন স্বপনের মৎস্য খামারে। পাখিদের নানা সুরেলা কণ্ঠের হাকডাক, ওড়াউড়ি, মিতালি-মাতামাতির জলকেলিতে মুখর হয়ে উঠেছে এর চারপাশ। যেন অঘোষিত পাখির অভয়ারণ্য।সরেজমিন দেখা যায়, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে রণচন্ডী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামের এই জলাশয়টি গড়ে উঠেছে পাখির অভয়ারণ্য। বিলের মাঝে বালি হাঁস, সরালি হাঁস, পানকৌড়ি, পিয়াং হাঁস, পাতি সরালিসহ নানা প্রজাতির পাখি বিল এলাকা মুখরিত করে তুলছে।

পাশেই রয়েছে বিশাল এলাকা জুড়ে মৎস্য খামার। সব মিলে ওই স্থানটি পাখিদের নিরাপদ প্রজনন, খাদ্য আহরণসহ আবাসস্থলের এক নিরাপদ বেলাভূমি। বিশেষ করে দেখা যায়, ওই খামারের মাছ রক্ষায় এর চারপাশ বাঁশের বেড়া (বানা) ও জাল দিয়ে, নিরাপদ বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। খামারের এমন নিরাপদ বেষ্টনীর আবাসস্থলে বালি হাঁস, সরালির মতো হাজার হাজার অতিথি পাখির ডুব সাঁতারে তৈরি হয় এক মনোরম দৃশ্য।
গোধূলি শেষে যখন সূর্য ডুবুডুবু অবস্থা, ঠিক তখন মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যায় এসব পাখি। উড়ে গিয়ে আশ্রয় নেয় আশপাশের গাছ-পালা, কচুরিপানা ও বাঁশ-ঝাড়ে। প্রতি বছর শীতে ফিরে আসে অতিথি পাখিগুলো।

স্থানীয়রা জানায়, এ পাখিগুলো শীতপ্রধান দেশে টিকতে না পারায় প্রতি বছর শীতের আগমনে এখানে আসে বাসা বাঁধে এবং ছানা ফুটিয়ে বড় করে তারপর বসন্তে উড়ে যায়। অতিথি পাখির পাশাপাশি পানকৌড়ি, চাপাখি, টুনটুনি, দোয়েল, শালিক, রাতচরা, কানা বক, সাদা বক, ধূসর বক, মাছরাঙ্গাসহ নানা প্রজাতির পাখির পসরাও বসে নিত্যদিন।

বাফলার বিল মৎস্য খামারের মালিক হাফিজ উদ্দিন স্বপন জানান, এই গ্রামের মানুষ  প্রকৃতি ও পাখিপ্রেমী। এ কারণেই পাখির অভয়ারণ্য এ বাফলার বিল পাড়া গ্রাম। খামারসহ বিলে পাখির নিরাপত্তা রক্ষায় সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি পাখিদের যেন কেউ ক্ষতি না করে সেজন্য খামার তত্ত্বাবধায়ক সার্বিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে যদি এই এলাকাকে সরকারিভাবে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়, তাহলে শীত মৌসুমে পাখিদের ভিড় আরও বাড়বে।

রণচন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান জানান, একসাথে এত পাখির আনাগোনা যা অন্য কোথাও নেই। অতিথি পাখির আগমনে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি এসব পাখি আমাদের এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। এ বিল পাখিদের একটি অন্যতম নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে গড়ে উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সেখানে পাখি শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments