Tuesday, February 4, 2025
HomeNationalবামনডাঙ্গা নদী হারিয়েছে ঐতিহ্য

বামনডাঙ্গা নদী হারিয়েছে ঐতিহ্য

নীলফামারী শহর ঘেঁষে বয়ে গেছে বামনডাঙা নদী। এই নদীকে ঘিরে দেড়শ’ বছর আগে গড়ে উঠে শাখামাছা বন্দর। এই নদীপথেই দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্যবাহী বড় বড় নৌকা নিয়ে ভিড়তো এ বন্দরে। সে সময় এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান বন্দর ছিল এটি। এতে প্রসার ঘটে ব্যবসা বাণিজ্যের। এই শাখামাছা বন্দরের তীরে প্রতিষ্ঠিত হয় তৎকালীন নীলফামারী মহকুমা শহর। সেই সুগভীর বহমান বামনডাঙ্গা নদী আজ হারিয়েছে তার অতীত ঐতিহ্য, পরিনত হয়েছে একটি ছোট্র নদী। তবে নদী বললেও ভুল হবে। যে নদী পথে পাল তোলা পণ্যবাহী নৌকা চলতো সেটি আজ জেলা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে অগ্রণী ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। 

স্থানীয়রা বলছেন, বিভিন্ন স্থানে নদীটিকে দখলে নিয়ে নানান স্থাপনা তৈরি করায় সংকুচিত হয়েছে এর পরিধি। কোথাও কোথাও আবার মাটি ফেলে নিজের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করছেন অনেকেই। নদীর দুই পারের পরিবারগুলোর নদীতে বর্জ্য ফেলায় দুষিত হয়েছে পানি। এতে বাতাসে ছড়াচ্ছে রোগ জীবানু। লোকজন আক্রান্ত হচ্ছে রোগ-ব্যাধীতে। হারিয়ে গেছে দেশীয় প্রজাতির মাছ।  সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উৎপত্তিস্থল থেকে শেষ মাথার বিভিন্ন অংশ অবৈধ দখলে যাওয়ায় নদীর মালিকানা অনেকটা দখলদারের কবলেই। 

নদী পারের বাসিন্দা বাবুল হোসেন বলেন, প্রায় দুই যুগ আগের কথা ‘যে নদীতে স্রোতের টানে দাঁড়ানো যেত না, সে নদী এখন নালা। প্রতিদিন মানুষ দখল করছে, গড়ে উঠেছে বসতবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব কেউ আর দেখেও না!’ এক সময়কার খরস্রোতা এই বামন ডাঙ্গা নদীর পানি প্রবাহ না থাকায় যেটুকু আছে সেটুকুও হারিয়ে যাচ্ছে মানচিত্র থেকে। এতে করে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি আগামী প্রজন্মের কাছে বামনডাঙ্গা নদী শব্দটি মুছে যাবে ইতিহাসের পাতা থেকে। শুধু তাই নয় বর্তমানে সরকারি ভূমি দফতরের কাগজপত্র বা নকশাতেও এখন বামনডাঙ্গা নদীর অস্তিত্ব নেই। 

নীলফামারী উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি আবু মুসা মাহামুদুল হক বলেন, ভরাট হয়ে যাওয়া  বামনডাঙ্গা নদীটি খনন করা হলে নীলফামারী শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি হবে এবং ঐতিহ্যবাহী নদীটির পূর্বপ্রদত্ত সুবিধা মানুষ উপভোগ করতে পারবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলৗ আমিনুর রহমান বলেন, বামনডাঙ্গাকে নদীর রুপ দিতে খনন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু নানা প্রতিকূলতার কারণে মাত্র এক কোটি টাকার কিছু বেশী ব্যয় করে খনন করা হয় ছয় দশমিক নয় মিটার। এতে বামনডাঙ্গাকে নদীর প্রকৃত রুপ দেয়া সম্ভব হয়নি। 

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments